টবে লেটুস চাষের পদ্ধতি
শাকসবজি উপাদনের জন্য যদি একখণ্ড জমি না থাকে তাহলে বাসা-বাড়ির ছাদে বা বারান্দায় বড় বড় টবে, মাটির চাড়িতে, ড্রামে কিংবা একমুখ খোলা কাঠের বাক্সে সারমাটি ভরে অনায়াসেই শাকসবজি চাষ করতে পারেন। লেটুস যেমন পুষ্টিকর সালাদ জাতীয় সবজি, তেমনি লেটুসে রয়েছে ভিটামিন এ, বি ও সি। কাজেই সুষম খাদ্যের জন্য এটা অধিক প্রয়োজনীয়।
লেটুস চাষে টবের মাটি
গাছের বৃদ্ধি এবং সবজি জাতীয় ফলনের জন্য মাটি অবশ্যই উর্বর, হালকা এবং ঝুরঝুরে হতে হবে। পানি শুকিয়ে গেলে টবের মাটি যেন ফেটে না যায় সেদিকে খেয়াল রাখা জরুরি। টবের মাটি ঝুরঝুরা রাখতে হলে সমপরিমাণে দো-আঁশ মাটি ও জৈব সার একসাথে ভালভাবে মিশিয়ে নিতে হবে। এঁটেল মাটিতে জৈব সারের পরিমাণ বৃদ্ধি করতে হবে। সাধারণ ভাবে প্রত্যেক টবের মাটিতে চা চামচের চার চামচ টিএসপি সার ও ৫/৬ দিন আগে ভেজানো ১১৬ গ্রাম পরিমাণ সরিষার খৈল মিশাতে হবে।
লেটুস চাষের সময়
ভাদ্র মাসের মাঝামাঝি থেকে অগ্রহায়ণের মাঝামাঝি পর্যন্ত বীজ থেকে চারা তৈরি করে টবে লাগানোর সঠিক সময়।
লেটুস চাষে বীজ বা চারা
গামলা টবে বীজ বুনলে ৩ থেকে ৪ দিনের মধ্যে চারা গজাবে। চারার ৪/৫ টি পাতা গজালে টবে লাগিয়ে দিতে হবে। সাধারণত লেটুস চাষের জন্য খুব বড় টবের প্রয়োজন হয় না।
লেটুস চাষে চারা রোপণ
শেষ বিকেলে চারা লাগানো ভাল। চারা লাগানোর সময় চারার গোড়ার মাটি খুবই হালকা চেপে দিতে হবে যাতে চারার নরম শিকড় চাপে ছিড়ে না যায়। চারা লাগানের পর ৩ থেকে ৪ দিন ঢাকনী দিয়ে চারাকে রোদ-বৃষ্টি থেকে রক্ষা করতে হবে এবং সকাল-বিকাল চারার গোড়ায় পানি ঢালতে হবে।
লেটুস চাষে রোগ বালাই
গোড়া পচা, আগা পোড়াদেখা দিলে গাছ তুলে ফেলা উচিত। জাব পোকা লেটুসের খুব ক্ষতি করে থাকে। কীটনাশক স্প্রে করতে হবে। কীটনাশক ছিটানোর ৭ দিনের মধ্যে লেটুস খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে।
লেটুস চাষে পরিচর্যা
টবে চারা লাগানোর পরেই অনেক সময় দেখা যায় চড়াই, শালিক, বাবুই ইত্যাদি ছোট ছোট পাখি চারার কচি পাতা এবং ডগা খেয়ে ফেলে, অনেক ক্ষেত্রে চারা উপড়ে ফেলে। সেক্ষেত্রে কয়েকটা ছিদ্রবিশিষ্ট পাতলা পলিথিন কাগজ বা লোহার নেট দিয়ে আলতো ভাবে টবটি ঢেকে রাখতে হবে। তাছাড়া শুকনো পাতা বা রোগাক্রান্ত অংশ কেটে ফেলতে হবে।
লেটুস সংগ্রহ
চারা লাগানোর ৩০ দিনের মধ্যেই লেটুস পাতা খাওয়ার উপযোগী হয়।